২০১৯ সালে World Footwear এই সেক্টরের বিশেষজ্ঞদের নিয়ে একটি প্যানেল তৈরি করে এবং এখন তাদের মাধ্যমে প্রতি সেমিষ্টারে আন্তর্জাতিক ব্যবসা জরিপ করে থাকে।
আন্তর্জাতিক ব্যবসা জরিপের উদ্দেশ্য হলো জুতা শিল্পের সাথে সম্পর্কিত বিভিন্ন দেশের বিশেষজ্ঞদের ব্যবসা পরিস্থিতির মতামত গ্রহন করা এবং সেসব মতামতের উপর ভিত্তি করে আন্তর্জাতিক জুতার ব্যবসার গতিবিধির একটা ধারনা পাওয়ার চেষ্টা করা।
এই জরিপের ৫ম সংস্করন গত বছরে অক্টোবরে পরিচালনা করা হয় যেখানে ১২২ জন বিশেষজ্ঞ তাদের মতামত প্রদান করেন। এই ১২২ জনে মধ্যে ৪৩% মতামত এসেছে ইউরোপ, ৩০% এশিয়া, ১৩% উত্তর আমেরিকা, ৭% দক্ষিন আমেরিকা, ৬% আফ্রিকা এবং ১% ওশেনিয়া অঞ্চলের বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে। মতামত প্রদানকারী অর্ধেক জুতা উৎপাদন কিংবা বিপননের সাথে জড়িত এবং বাকী অর্ধেক জুতা সম্পর্কিত অন্যান্য ট্রেড এসোশিয়েশন, কন্সাল্টেন্সি অ্যান্ড সাংবাদিকাতার সাথে জড়িত ছিলেন।
সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান অনুসারে বৈশ্বিক জুতার বানিজ্য তার স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরত আসার আভাস পাওয়া যায় যদিও ভিন্ন ভিন্ন দেশের অবস্থা ভিন্ন ভিন্ন। আমেরিকা, জার্মানি, ফ্রান্স, ইতালির ক্ষেত্রে জুতার আমদানি অনেকটা কোভিড পুর্ববর্তি অবস্থায় প্রত্যাবর্তিৎ হয়েছে, অন্যদিকে পোল্যান্ড কিংবা চীনের মতো দেশের আমদানি এমনকি কোভিড পুর্ববর্তি অবস্থা থেকে বেশি। স্পেন, বেলজিয়াম এবং জাপানের মতো দেশের কোভিড পুর্বর্তি অবস্থায় ফিরতে বেশি সময় লাগছে।
৫ম সংস্করনের চুম্বক অংশঃ
১। আগামী ছয় মাসে ব্যবসার অবস্থা কেমন হবে?
উত্তরদাতাদের অধিকাংশই মনে করেন যে আগামী ছয় মাসে ব্যবসার অবস্থা আরো ভালো (৪৬%) কিংবা খুব ভালো (১৩%) হবে, যদিও ১৫% মনে করে যে ব্যবসা পরিস্থিতি খারাপ হবে। এশিয়ার উত্তরদাতাদের মধ্যে ২৯% মনে করে ব্যবসা খুবই ভালো হবে যা মাত্র ৪% ইউরোপিয়ান মনে করে।
২। আগামী ছয় মাসে কর্মসংস্থানের অবস্থা কেমন হবে?
তাদের প্রতিষ্ঠানে কর্মসংস্থানের অবস্থা কেমন হবে জানতে চাইলে, বেশিরভাগই আশাবাদ ব্যক্ত করেন। ৪৪% মনে করেন কর্মসংস্থান বাড়বে এবং ৫১% মনে করেন যে এখন যেমন আছে তেমনই থাকবে। এক্ষেত্রে এশিয়া বা ইউরোপের অংশগ্রহনকারীদের দৃষ্টিভঙ্গি একই রকম।
৩। আগামী ছয় মাসে জুতার দাম কেমন হবে?
বিশ্বের প্রায় সর্বত্র মুদ্রাস্ফীতি বা অন্যান্য অর্থনৈতিক বিবেচনা থেকে উত্তরদাতাদের ৭৭% জুতার দাম বাড়বে বলেই মনে করেন। ২০% একই দাম থাকবে মনে করলেও ৩% কমবে বলে মনে করেন। ওশেনিয়া, ইউরোপ বা উত্তর আমেরিকার অংশগ্রহণকারীগন জুতার দাম বাড়বে বলে বেশি মনে করেন যেখানে এশিয়া বা আফ্রিকা অঞ্চল থেকে অংশগ্রহণকারীগন বাড়ার ক্ষেত্রে বেশি সতর্ক মতামত প্রদান করেন।
৪। আগামী ছয় মাসে জুতার ব্যবসার পরিমাণ কেমন হবে?
উত্তরদাতাদের ৫৭% জুতার ব্যবসার পরিমান বাড়বে বলেই মনে করেন। ৩০% মনে করেন যে ব্যবসার পরিমান একই থাকবে। ১৩% আগামী ছয়মাসে জুতার পরিমান কমবে বলে মনে করেন।
৫। আন্তর্জাতিক জুতার বাজারে আগামী ৬ মাসের সমস্যা
উপকরনের উর্ধগামী চাপের কারনেই অধিকাংশ উত্তরদাতা পণ্যদ্রব্য বা কাঁচামালের খরচকে আগামী ছয় মাসের জন্য এই খাতের সবচেয়ে বড় সমস্যা (৮৪% উত্তরদাতা) বলে মনে করেন। বৈশ্বিক সরবরাহ ব্যবস্থায় অস্থিতিশীলতা যা মহামারী শুরুর থেকেই অনেকটা দৃশ্যমান এই খরচ বাড়ার একটা কারন। এর সাথে সাথে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে করোনা ভাইরাসের নতুন নতুন ভেরিয়েন্ট, লকডাউনের কারনে উৎপাদন কমে যাওয়া খরচ বৃদ্ধির কারন হিসেবে মনে করেন অনেক উত্তরদাতা। ঠিক একই কারনে মানব সম্পদের সমস্যাকে দ্বিতীয় প্রধান (৪৩% উত্তরদাতা) হিসেবে চিহ্নিত করেছেন উত্তরদাতাগন।
তথ্যসুত্রঃ
Business Conditions Survey Second Semester 2021| Publications – World Footwear