বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) গত বছর এপ্রিল থেকে জুলাই পর্যন্ত বাংলাদেশে ব্যবসার পরিবেশ নিয়ে ব্যবসায়ীদের মতামতভিত্তিক এক জরিপ পরিচালনা করে। ঢাকা, চট্টগ্রাম, নায়ায়নজং, গাজীপুর ও ফরিদপুর অঞ্চলের ৭৩ টি ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠানের উচ্চ-পদস্থ কর্মকর্তারা সুনির্দিষ্ট ১০ টি সূচকের ওপর ভিত্তি করে এ জরিপে অংশ গ্রহন করে। এসব প্রতিষ্ঠান কৃষি, সেবা এবং উৎপাদনমুখী শিল্পের সঙ্গে জড়িত এবং মূলধন ১০ কোটি টাকার বেশি। গত ২৬ শে জানুয়ারী সিপিডি এক সংবাদ সম্মেলনে জরিপের ফলাফল প্রকাশ করে।
জরিপে অংশ নেওয়া ৬৮ শতাংশ ব্যবসায়ী, ব্যবসার ক্ষেত্রে দুর্নীতিকে প্রধান প্রতিবন্ধকতা হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। তাঁরা বলেছেন, ব্যবসার জন্য বিভিন্ন পরিষেবা গ্রহণের ক্ষেত্রে তাঁদের আর্থিক লেনদেন করতে হয়েছে। দুর্নীতির পর অদক্ষ আমলাতন্ত্রকে ব্যবসার ক্ষেত্রে দ্বিতীয় প্রতিবন্ধকতা হিসেবে চিহ্নিত করেছেন ব্যবসায়ীরা। জরিপে অংশ নেওয়া ৬৭ শতাংশ ব্যবসায়ী এ মতামত দিয়েছেন। আর ব্যবসার ক্ষেত্রে পুঁজির জোগানের সংকটের কথা বলেছেন ৫৫ শতাংশ ব্যবসায়ী। ৪২ শতাংশ ব্যবসায়ী বলেছেন, দেশের সামষ্টিক অর্থনীতি পরিস্থিতি এখন বেশ চাপে আছে।
জরিপে অংশ নেওয়া ব্যবসায়ীদের কাছে প্রশ্ন ছিল, করোনার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে কত সময় লাগতে পারে বলে তাঁরা মনে করছেন। জবাবে ৪৫ শতাংশ ব্যবসায়ী বলেছেন, তিন বছরের বেশি সময় লাগবে। তাঁদের হিসাবে, ২০২৫ সালে গিয়ে দেশের অর্থনীতি ক্ষতি কাটিয়ে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরবে। আর ৭ শতাংশ ব্যবসায়ী বলেছেন, অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে এক বছরের কম সময় লাগবে।
ব্যবসায়ীদের মতামতভিত্তিক জরিপটি করা হয়েছিল করোনাকালে। তাই স্বাভাবিকভাবে ব্যবসায়ীদের কাছে করোনার প্রভাব ও ক্ষতি পোষাতে নেওয়া বিভিন্ন উদ্যোগ সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয় এ জরিপে। জবাবে ২৮ শতাংশ ব্যবসায়ী বলেছেন, করোনার প্রভাবে বাধ্য হয়ে তাঁদের খরচ কমাতে হচ্ছে। সে কারণে কমাতে হচ্ছে শ্রমিক। ২২ শতাংশ ব্যবসায়ী বলেছেন, তাঁরা নতুন ক্রেতার সঙ্গে কাজ করছেন। আর ১৯ শতাংশ বলেছেন, তাঁরা ব্যবসা বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছেন।
এ ছাড়া ব্যবসায়ীরা ৫ টি ভিন্নভিন্ন খাতে আগামী দুই বছরে কি ধরনের ঝুঁকি তৈরির হওয়ার আশঙ্কা আছে তাও ব্যক্ত করেছেন।
আগামী ১০ বছরে দেশে নতুন বেশ কিছু ব্যবসার খাত তৈরি হবে বলে জরিপে উঠে এসেছে। ৬৭ শতাংশ ব্যবসায়ী বলেছেন, ডিজিটাল আর্থিক সেবা আরও বিকশিত হবে। দক্ষ মানবসম্পদ খাতকে সম্ভাবনার দ্বিতীয় অবস্থানে রেখেছেন ব্যবসায়ীরা। তৃতীয় অবস্থানে আছে তথ্য-উপাত্ত (ডেটা) ব্যবস্থাপনা।
তথ্যসুত্রঃ
১। প্রথম আলো
২। সিপিডির ওসাইট